জেল সুপার শাহ আলমের নেতৃত্বে নতুন রূপে কক্সবাজার জেলা কারাগার

কক্সবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপার  মোহাঃ শাহ আলম খান

কক্সবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপার  মোহাঃ শাহ আলম খান

কক্সবাজার জেলা কারাগারকে মাদক, দূর্নীতিমুক্ত মডেল কারাগার হিসেবে বাস্তবে রুপদানে বদ্ধপরিকর  কক্সবাজার  জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাঃ শাহ আলম খান। জেল সুপার হিসেবে কারাগারে যোগদান করেছেন প্রায় ২০ মাস। এরিমধ্যে তিনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন কক্সবাজার জেলা কারাগার হবে বাংলাদেশের রোল মডেল এবং মডেল কারাগারের উজ্জ্বল প্রতীক। কারা সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার কারাগারে বর্তমানে বন্দী রয়েছে সাড়ে ৪ হাজারের উপর। কারাগারে সিট ও ওয়ার্ড  বাণিজ্য রোধে একজন ডেপুটি জেলারের উপস্থিতিতে  লটারির মাধ্যমে বন্দীদের স্থানান্তর করা হয়।

বন্দীদের সাথে আত্নীয় স্বজনের দেখা সাক্ষাতের ব্যাপারেও নেয়া হয়েছে অতুলনীয় পদক্ষেপ। শৃঙ্খলা ফেরাতে সাক্ষাৎকারে স্বচ্ছতা আনয়নে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করণে সজাগ ও সতর্ক রয়েছেন কারা কর্তৃপক্ষ। কারাবিধি মতে আত্নীয় স্বজন সহ যাতে দর্শনার্থীরা দেখা করতে পারে সেজন্য কারা কর্মকর্তা/ কর্মচারীদের ভালো আচরণ পাশাপাশি পেশাদারিত্ব বাস্তবায়নে কড়াকড়ি নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। যার ফলে বন্দী ও দর্শনার্থীরা এর সুফল ভোগ করছেন।

সূত্র জানায়, কক্সবাজার জেলা কারাগারে বন্দীদের খাবারের মান ও পরিমাণে এসেছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। বন্দীরা কারা কর্তৃপক্ষের এ আন্তরিক সেবায় মুগ্ধ। বন্দীরা যাতে কারা বিধি মোতাবেক প্রাপ্য অংশ ভোগ করতে পারে সেজন্য জেল সুপার নিজে খাবারের মান পরীক্ষা করে বন্দীদের সরবারাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। জেল সুপারের অনুপস্থিতিতে ও অধস্তন কর্মকর্তারা  সরকারি বিধি মোতাবেক  বন্দীদের প্রাপ্য অংশ যথাযথ বন্টন করেন। 

কারা সূত্রে আরো জানা যায়, কারাগারে বিকাশ অথবা নগদ লেনদেনের  ব্যাপারে জেল সুপার সজাগ রয়েছেন।মাসিক তদারকি এবং দরবার অনুষ্ঠানে  কারারক্ষী, এবং কর্মচারীদের অবৈধ লেনদেনের ব্যাপারে হুঁশিয়ারি  প্রদান করে যথাযথ সেবামূলক দায়িত্ব পালনের নির্দেশ প্রদান করেন জেল সুপার। এমনকি জেল সুপার নিজে আকস্মিকভাবে আগত দর্শনার্থীদের সাথে কথা বলে সুবিধা অসুবিধার কথা জেনে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। কারা ফটকের সামনে এলইডি প্রদর্শনীর মাধ্যমে প্রতারক চক্র থেকে সাবধান হওয়ার পাশাপাশি অবৈধভাবে লেনদেন না করার জন্য দর্শনার্থীদের সুপরামর্শ প্রদান করেন।

কারা সূত্র আরো জানায়, দূর্নীতি এবং মাদকের বিরুদ্ধে সজাগ থেকে মডেল কারাগার রুপান্তরে অবিচল আছেন বর্তমান জেল সুপার। বিকাশ অথবা নগদে যাতে অবৈধ লেনদেন না হয় সেজন্য লেনদেন সনাক্তকরণে কর্মকর্তা এবং কর্মচারীর জাতীয় পরিচয় পত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস সংরক্ষণ করা হয়েছে ।বন্দীদের সরকারি মোবাইল বুথে কথা বলার ক্ষেত্রে এসেছে পূর্ণ শৃঙ্খলা। প্রতিটি বন্দী পিসি কার্ডের মাধ্যমে প্রতি মিনিটে এক টাকা খরচ করে সপ্তাহে একদিন এবং সর্বোচ্চ ৬ মিনিট কথা বলতে পারবে। কারাভ্যন্তরে অবৈধ নগদ লেনদেনের কোন সুযোগ নেই।ফলে সকল বন্দী কারা বিধিমতে সমান সুযোগ পাচ্ছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, কারা ক্যান্টিনে ন্যায্যমূল্যে মালামাল বিক্রি করার ক্ষেত্রে এসেছে স্বচ্ছতা,  বর্তমান ক্যান্টিনে নির্ধারিত মূল্য তালিকা ঝুলানো হয়েছে। নগদ টাকায় মালামাল বিক্রি সম্পূর্ণ বন্ধ করা হয়েছে। কারাগারে বিধি মোতাবেক কারারক্ষী বাছাই করে নিয়োজিত করা হয়েছে  এরফলে বর্তমান কারাগারে বন্দীরা ন্যাযমূল্যে প্রয়োজনীয় মালামাল ক্যান্টিন থেকে ক্রয় করার সুযোগ পাচ্ছে।

বর্তমান জেল সুপারের সার্বিক তত্বাবধায়নে বন্দী উন্নয়নে কাজ করা হচ্ছে । এমনকি বন্দীদের সাথে ভালো আচরণের ব্যাপারেও কারারক্ষীদের মোটিভেশন করা হচ্ছে। জামিনপ্রাপ্ত আসামীরা খালাসে বা জামিনে হয়রানির শিকার হচ্ছে না। কারা কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতার আরেকটি যুগান্তকারী ফসল হচ্ছে, প্রতিদিন জামিনপ্রাপ্ত বন্দীদের নাম কারা ফটকের সামনে এলইডি ডিসপ্লের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়। এতে ভোগান্তির কোন সুযোগ নেই। 

সদ্য জামিনপ্রাপ্ত একাধিক ব্যক্তি প্রতিবেদককে জানান, কারাগারের পরিবেশ বেশ চমৎকার। কারাগারে নেই কোন আর্থিক লেনদেন। ওয়ার্ড ও সিট বাণিজ্যের প্রচলন ও নেই।বন্দীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতকরণে কারা কর্তৃপক্ষ সকলে আন্তরিক। সর্বোপরি বলতে গেলে বর্তমান কারাগারে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। কারাগারে এসেছে সামগ্রিক পরিবর্তন। 

তারা আরও জানান, কারাগারে খাবারের মান উন্নত করা হয়েছে। ক্যান্টিনে ন্যায্য মূল্যে জীবনউপকরণের সবকিছু বিক্রি করা হচ্ছে। আর্থিক লেনদেন কারাগারে নেই বললেই চলে। কারাগারে বন্দীদের বিনোদনের জন্য কারাভ্যন্তরে  উন্মুক্ত স্থানে এলইডি বড় মনিটর সংযোজন করা হয়েছে। এরফলে  বন্দীদের জন্য  প্রতিদিন বিকেলে এক ঘন্টা করে মোটিভেশনাল প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছে।এমনকি বন্দীদের বিনোদনের জন্য নাটক, গান ইত্যাদি পরিবেশন করা হয়। সময়ের পরিক্রমায় কারাগারে "সেবার মান উন্নত করে  রাখিব নিরাপদ, দেখাবো আলোর পথ" এ প্রতিপাদ্য বিষয়কে বাস্তবে রুপান্তর করা হয়েছে । বন্দীদের জামিন চিকিৎসা এমনকি আবাসনের ক্ষেত্রেও নেয়া হয়েছে যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এর সুফল ভোগ করছেন বন্দীরা।

কারা কর্মকর্তা,কর্মচারী এবং কারারক্ষীদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বর্তমানে বন্দীরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কারা কর্মকর্তা জানান,মাদক, ঘুষ দূর্নীতির বিরুদ্ধে অবিচল আছেন বর্তমান জেল সুপার স্যার। তিনি মাসিক তদারকি এবং দরবার অনুষ্ঠানে প্রাত্যহিক পরিদর্শনে বন্দীদের নিরাপত্তা, সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে কারারক্ষীদের পরামর্শসহ  কাজের প্রতি আন্তরিক, অনুপ্রেরণা,  উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টিতে কারারক্ষীদের প্রেষণা দান করেন।

কক্সবাজার জেলা কারাগারের চৌকস জেল সুপার মোহাঃ শাহ আলম খান জানান, মাদক, দূর্নীতি,ঘুষ ও অবৈধ লেনদেনের বিরুদ্ধে  সজাগসহ সহ সতর্ক রয়েছি। সামগ্রিক পরিবেশে শৃঙ্খলা ফেরাতে  ন্যায় নীতিকথাকে সামনে রেখে যাবতীয় কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সামগ্রিক কারা চিত্রে শৃঙ্খলা ফেরাতে সর্বোচ্চ কার্যক্রম পেশাদারিত্বের সাথে পালন করা হচ্ছে।এমনকি কারা কর্মকর্তা/ কর্মচারীও বন্দীদের সকল কাজে নিশ্চিত করা হচ্ছে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন। এর ফলে কক্সবাজার জেলা কারাগারের বর্তমান কার্যক্রম সর্বমহলে বেশ প্রশংসিত। শুদ্ধাচার কৌশল নিয়ে কারাগারে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদোর অংশগ্রহণে প্রতিযোগিতার পাশাপাশি পুরস্কৃত করা হচ্ছে।

 চলমান কারাগারে  সুন্দর, সুশৃঙ্খল পরিবেশ নিশ্চিত করণে তিনি সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।

   


পাঠকের মন্তব্য