এ যেন অনিয়ম দূর্নীতির কারখানা খুলে বসেছেন ইউডিসি'র উদ্দোক্তা রাসেল !

ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা কাজী রাসেল

ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা কাজী রাসেল

পটুয়াখালী সদর উপজেলার ছোট বিঘাই ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা কাজী রাসেলের বিরুদ্ধে (২৫ মার্চ) পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক বরাবর অনিয়ম ও দূর্নীতির লিখিত অভিযোগ করেছেন ৭ ইউপি সদস্য।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইউডিসি'র উদ্যোক্তা কাজী রাসেল মাতৃত্বকালীন ভাতা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি ৪৫ টাকা থাকলেও আবেদন করার জন্য দরিদ্র মায়েদের থেকে ৭০০ টাকার বেশি নিয়ে থাকেন এবং তাঁর পরিচালিত ব্যাংক এশিয়া থেকে ভুক্তভোগীরা টাকা উত্তোলন করতে গেলে ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা জোরপূর্বক কর্তন করে রেখে দেন। 

এছাড়াও মুজিব বর্ষের ঘর দেয়ার নামে প্রায় ৭০০ সাধারণ মানুষের থেকে ৩০০-৫০০ টাকা আবেদনের নামে হাতিয়ে নিয়েছেন। ওয়ারিশ সনদ প্রদানের জন্য প্রতিটি সনদে ৫০০-৭০০ টাকা আদায় করে পেইড লেখা স্লিপের মাধ্যমে যাহা ইউনিয়ন পরিষদের ক্যাশ বই কিংবা ব্যাংক হিসাবে জমা করার জন্য ইউপি সচিবের কাছে হিসাব প্রদান করেন না এবং গ্রাম আদালতে মামলার জন্য প্রতিটি মামলার ফি বাবদ ৫০০ টাকা করে আদয় করেন।

অভিযোগে আরো বলা হয়েছে- গ্রাম আদালত মামলা, জন্ম নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স, ওয়ারিশ সনদ, মাতৃত্বকালীন ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ও ভিজিডি আবেদন সহ সকল রকমের সরকারি ভাতা আবেদন কিংবা প্রত্যায়ন উদ্দ্যেক্তার মাধ্যমে করাতে বাধ্য করা হয়। আবেদনকারী নিজে অথবা উদ্দ্যেক্তা ব্যাতিত সেন্টারের বাহিরে কোন কম্পিউটার দ্বারা আবেদন করালে সেই আবেদন ইউনিয়ন পরিষদে গ্রহণ করা হয় না। জনসাধারণকে জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করার জন্য এমন পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন।

অভিযোগ রয়েছে জনসাধারণ ও ইউপি সচিবসহ পরিষদের সদস্যদের সাথে প্রায় সময়েই খারাপ ব্যবহার করে থাকেন এবং বেশিরভাগ সময় ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার বন্ধ রেখে খামখেয়ালী করে ব্যক্তিগত কাজে ঘুরে বেড়ায়। ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের আইন অনুযায়ী একটি সেন্টারে একজন মহিলা উদ্দোক্তা ও একজন পুরুষ উদ্দ্যোক্তা এবং ২ জন সহকারী উদ্দ্যেক্তা থাকার বিধান থাকলেও একমাত্র কাজী মোঃ রাসেল একাই নাম মাত্র উদ্দোক্তা হিসাবে ইউডিসি পরিচালনা করে আসছে। ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে বিভিন্ন সেবার ফি নির্ধারণ করার জন্য মিটিং এ বসতে বললে ও সে কখনো মিটিং এ বসেনি। উল্টো প্রায় সময়েই জনগণের থেকে বেশি টাকা রেখেছে মর্মে উক্ত অভিযোগকারীদের কাছে অনেকে মৌখিক এবং লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। 

এছাড়াও উদ্দ্যেক্তা কাজী রাসেল একজন খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ডিলার সেখানে চাল বিতরণ সহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগকারী ছোটবিঘাই ৯নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেন, গত এক থেকে দুই বছর যাবত এই অনিয়মটি আমরা লক্ষ্য করেছি এবং বিভিন্ন সময়ে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হয়ে আমাদের কাছে বিচায় দেন, কিন্তু এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের কাছে বললেও এর কোন সুরাহা পাওয়া যায়নি, তাই আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে বাধ্য হয়েছি, আমরা এর সুস্থ বিচার চাই। 

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে, ডিজিটাল সেন্টারের উদ্দ্যোক্তা কাজী রাসেল জানান, নারী ইউপি সদস্য নারগিস আক্তারের স্বামী আব্দুস ছালাম গাজীর সাথে একটা বিষয় নিয়ে তর্কবিতর্ক হয়েছিলো তাই তিনি মেম্বারদের নিয়ে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়েছে। তবে আমার বিরুদ্ধে যেসকল অভিযোগ দেয়া হয়েছে তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোঃ নূর কূতুবুল আলম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই তবে রবিবার অফিস টাইমে ফোন দিলে দেখে বলতে পারব।

   


পাঠকের মন্তব্য