জাতীয় সম্মেলন ও নতুন কমিটি থেকে যে বার্তা পেলো তৃণমূল 

জাতীয় সম্মেলন ও নতুন কমিটি থেকে যে নির্দেশনা পেলো তৃণমূল 

জাতীয় সম্মেলন ও নতুন কমিটি থেকে যে নির্দেশনা পেলো তৃণমূল 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন তিনি বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই আবারো তার দলের সভাপতির পদ গ্রহণ করেছেন। যদিও দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন আওয়ামী লীগে শেখ হাসিনা অপরিহার্য এবং তার কোনো বিকল্প নেই।

এদিকে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে গঠিত কমিটির সদস্যরা আজ প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এরপর গণভবনে নতুন কমিটির সদস্যদের উদ্দেশ্যে দেয়া বক্তৃতায় তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে কেন তিনি আবারো দলের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
 
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থাকে বিবেচনায় নিয়েই তিনি দলের নেতৃত্ব আবারো গ্রহণ করেছেন। তবে নতুন নেতৃত্বের বিষয়টিও তিনি এ সময় সবাইকে মনে করিয়ে দিয়েছেন। শনিবার সম্মেলনে সভাপতি পদে শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদের ছাড়া আর নাম না আসেনি।

পরে দলটির কমিটির অন্য যেসব সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়েছে তাতেও তেমন কোন নতুন মুখ নেই। তবে দলীয় কর্মকাণ্ডে খুব একটা সক্রিয় নন এমন কয়েকজনকে এবার কমিটিতে রাখা হয়নি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আজ অবশ্য বলেছেন তার দলে শেখ হাসিনা অপরিহার্য্য এবং এখনো তার বিকল্প নেই।

তবে এবারের কমিটিতে পুরনোদের আধিক্যের কারণে ব্যাখ্যা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন নির্বাচন ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণেই এবারের সম্মেলনে ঘোষিত কমিটিতে পুরনোই বেশি দায়িত্ব পেয়েছেন।

“নির্বাচনকে সামনে রেখে ও বিশ্ব পরিস্থিতিতে ছাড়াও দেশের সংকট আছে। বিএনপি সরকার হটানোর আন্দোলন করছে। এ পরিস্থিতিতে অনেক চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে। এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রমে অভিজ্ঞদেরই আবার নেতৃত্বে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের সভাপতি।” আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের  এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হলেন যা স্বাধীনতার পর দলটিতে আর কখনো দেখা যায়নি।

এর কারণে হিসেবে দলের নেতারা মনে করছেন নির্বাচনের মাত্র এক বছর আগে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে পরিবর্তন এলে সেটি নির্বাচনী প্রস্তুতির জন্য যথাযথ নাও হতে পারে। আবার বিরোধী দল বিএনপি সরকারের পতন ও নির্দলীয় সরকারের দাবিতে যে আন্দোলন করছে সেটি শক্ত ভিত্তি পেলে নতুন কারও পক্ষে মোকাবেলা করাও কঠিন হতে পারে- এটিও বিবেচনায় নেয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

একই সঙ্গে মাঠ পর্যায় থেকে যেসব কাউন্সিলররা ঢাকা এসেছেন তাদেরকেও নির্বাচনের জন্য দলকে সুসংগঠিত করার বার্তা দেয়া হয়েছে।
 
রাজশাহীর একজন কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান আসাদ বলছেন, দলীয় প্রধান নির্বাচনকে সামনে রেখে যা ভালো মনে করেছেন সেটি করেছেন এবং কাউন্সিলররাও এটিই চেয়েছেন। “আগামী নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে। সে জন্য শেখ হাসিনা যে আহবান ও নির্দেশনা দিয়েছে তা নিয়েই আমরা নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যাচ্ছি”।

এবারের সম্মেলনের আগে বেশ কিছু জেলা ও উপজেলায় নতুন কমিটি করেছে আওয়ামী লীগ। সেসব জায়গাতেও তরুণদের পাশাপাশি অভিজ্ঞ নেতাদের রাখা হয়েছে রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই।
 
দক্ষিণাঞ্চলীয় পিরোজপুর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম আব্দুল আউয়াল বলছেন, যে দলকে কীভাবে শক্তিশালী করতে হবে এবং কীভাবে দলের সমর্থক বাড়াতে হবে সে নির্দেশনাও তারা পেয়েছেন এবারের সম্মেলন থেকে। “সুসংগঠিত থেকে দলের আদর্শ ও মেনিফেষ্টো মানুষের মধ্যে প্রচার করতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্য ছিলো। মূল বিষয় হলো নির্বাচনে যাকেই দলীয় প্রতীক দেয়া হবে সবাই তার জন্যই কাজ করতে হবে”।

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ অবশ্য বলেছেন দেশের আটটি বিভাগে দলের কার্যক্রমের দেখভালের জন্য আটটি টিম তিনি গঠন করবেন এবং তারাই নতুন সদস্য তৈরি থেকে অন্য সব কর্মকাণ্ডের দেখভাল করবেন।

তৃণমূলের নেতারা বলছেন এর ফলে নির্বাচনের আগেই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দলের অভ্যন্তরীণ সমস্যা থাকলে সেটিও যেমন দুর হবে তেমনি সংগঠনের শক্তিও বাড়ানো সম্ভব যেটি তারা বিরোধী দলকে মোকাবেলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন।

   


পাঠকের মন্তব্য