রাঙ্গাবালীর তরমুজ চাষীদের মাথায় হাত; আর্থিক ক্ষতিতে দিশেহারা

তরমুজ চাষীদের মাথায় হাত

তরমুজ চাষীদের মাথায় হাত

কেউ দাদনে কেউবা আবার ধারদেনা করে তরমুজের চাষ করছিলেন। লাভের আশায় বুক বেঁধেছিলেন কৃষকেরা। গাছগুলো বেড়ে উঠা শুরু হতে না হতেই শুরু হয় পোরা রোগ। এতে আকাশ ভেঙ্গে পড়ছে কৃষকের মাথায় নিশ্চিত ক্ষতি দেখতে পেয়ে তারা এখন দিশেহারা। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় অনেক ফলন ক্ষেতে রেখেই চলে গেছে কৃষকেরা। 

মৌসুমি ফল তরমুজ আবাদে সুপরিচিত এলাকা পটুয়াখালী জেলার  রাঙ্গাবালী উপজেলার ইউনিয়ন গুলো, এখানকার চাষীদের কাছে দ্বিতীয় অর্থকরি ফসল হিসেবে ও পরিচিত। এখানে প্রায় ১৫ হাজারের অধিক তরমুজ চাষী থাকলেও চলতি মৌসুমে তা নেমে এসেছে ৮ হাজারে। 
 
ফলন ভাল হওয়ায় পাশাপাশি চাহিদা থাকায় এ অঞ্চলের কৃষকদের প্রধান অর্থকরী  ফসল ছিল তরমুজ চাষ। গত ৩ বছর চাষিদের ফলনগুলো নষ্ট হওয়াতে লাখ লাখ টকার  ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ায় এবং ধার দেনার চাপে ক্রমাগত ভাবে চাষী কমে গেছে। রাঙ্গাবালীর বেশিরভাগ তরমুজ ক্ষেত পুরে যাচ্ছে। উপজেলার  ছোটবাইশদিয়া, বড়বাইশদিয়া, চালিতাবুনিয়া, মৌডুবি ও রাঙ্গাবালী ইউনিয়ন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে

উপজেলার, রাঙ্গাবালী ইউনিয়নের হাবিবুর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে আমি ৭ একর জমিতে তরমুজের চাষাবাদ করেছি, গাছ পুরে মরে যাচ্ছে কোন ঔষধ কাজে আসছে না, বাজারে নানান বাজে কোম্পানির ঔষধ ঢুকে পরেছে যে যেটা বলে সেটাই প্রয়োগ করছি, সরকারী কোন ধরনের সহায়তা পাচ্ছিনা এখন পর্যন্ত আমার খরচ হয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা আরো ৬০ হাজার টাকার সার ও কিটনাষক লাগবে,সরকারী সহায়তা পেলে কৃষক বাচবে আর সহায়তা না পেলে কৃষক মরে যাবে।

উপজেলার,বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের তরমুজ চাষী নাসির ইকবাল সানি বলেন, চলতি মৌসুমে আমি ৬ একর য়ের বেশি তরমুজয়ের চাষাবাদ করেছি,অবস্থা বেশি ভালনয় গত বছরেও প্রজেক্ট নস্ট হয়েছে এ বছরেও একই অবস্থা ধারদেনা কিভাবে পুষিয়ে উঠবো যানিনা।

উপজেলার, ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কৃষক রুহুল সিকদার বলেন,চলতি মৌসুমে আমি ২ বিগা জমিতে তরমুজের চাষাবাদ করেছি সার কিটনাষক ঔষধ  মিলিয়ে আমার ২ লক্ষ টাকা ব্যায় হয়েছে, এখন সব গাছ মরে গেছে গত বছরেও একই অবস্থা হয়েছিল।

ভোলা থেকে আসা তরমুজ ব্যবসায়ী মোঃ বাবুল বলেন, প্রতিবছরই রাঙ্গাবালীতে তরমুজ কিনতে আসি, এ বছর তরমুজের ফলন ভালনা হওয়াতে পর্যাপ্ত কিনতে পারছিনা। গত বছরের চাইতে এ বছর আরো খারাপ হয়েছে, অনেক কৃষক কিটনাষক প্রয়োগ করতে যানেনা যার ফলে গাছ মরে যাচ্ছে। যে তরমুজ কেজিতে ১০-১২ কেজি হত তা এখন ৪-৫ কেজিতে নেমে এসেছে।

রাঙ্গাবালী কৃষি কর্মকর্তা ইকবাল আহম্মেদ জানান, এ বছর প্রায় ৮,২৬২ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষাবাদ হয়েছে। তবে আমাদের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ৯,৪৫০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার ১১৮৮ হেক্টর  জমিতে যারা  তরমুজ চাষ করেননি তারা অন্য ফসলে চলে গিয়েছেন। আর যে সমস্ত কৃষক তরমুজ চাষ করছেনা তাদের মধ্য বেশির ভাগ মুগ ডাল চাষাবাদ করেছেন। কিছু যায়গাতে ভাল হয়েছে যেমন উপজেলার কাউখালী, চর মোন্তাজ, চর নজীর, মৌডুবী ইউনিয়নের কিছু যায়গাতে ও ভাল হয়েছে।

তবে একই জমিতে বারবার তরমুজ চাষের  কারনে এবং সঠিক ভাবে কীটনাশক প্রয়োগ ও ব্যবহার না যানার কারনে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এটা চলতে থাকলে তরমুজ থেকে এক সময় মুখ ঘুরিয়ে নেবে রাঙ্গাবালীর তরমুজ চাষিরা আর তরমুজ দিবে না, উত্তরণের উপায় যানতে চাইলে তিনি বলেন, গ্যাপ দিয়ে চাষ করতে হবে অর্থাৎ ১ বছর ২ বছর অন্য  ফসলে যেতে হবে তার পরে তরমুজে ফিরে আসতে হবে।

 

   


পাঠকের মন্তব্য