ফরিদপুরে টেন্ডার ছাড়াই সরকারি গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ

অর্ধশত মেহেগুনি গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ

অর্ধশত মেহেগুনি গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ

ফরিদপুরে টেন্ডার ছাড়াই সরকারি রাস্তার অর্ধশত মেহেগুনি গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় ইউপি মেম্বার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। যার প্রতিটি গাছের মূল্য ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা এবং অর্ধশত গাছের বাজার মূল্য দাড়ায় প্রায় ৭ লক্ষ টাকা। 

সম্প্রতি জেলা সদরের কৈজুরী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি মেম্বার হায়দারের খানের নেতৃত্বে কৈজুরী গ্রামের দক্ষিণপাড়া এলাকার রাস্তা থেকে এসব গাছ কেটে নেয় স্থানীয় জামাল মল্লিক, বাবু মল্লিক ও প্রদীপ মাষ্টার নামে তিন ব্যক্তি। এরমধ্যে বাবু নামের এক ব্যক্তি ১৬টি গাছ এবং জামাল হোসেন ৪/৫টি গাছ কেটে নিয়েছে বলে নিজেরাই স্বীকার গিয়েছে। 

জানা যায়, ওয়ার্ল্ড ভিশন প্রজেক্টের আওতায় ২০০১ সালে কৈজুরী গ্রামে শতাধিক মেহেগুনি গাছ লাগানো হয়। কিন্তু ওয়াল্ড ভিশনের এই প্রজেক্ট শেষ হয়ে যাওয়ায় গাছগুলো ইউনিয়ন পরিষদের মালিকানাধীন হয়। বর্তমান গাছগুলো বিক্রির উপযোগী হয়ে উঠে। ইউনিয়ন পরিষদের মালিকানাধীন যেকোনো ধরনের টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিক্রির করার নীতি রয়েছে। 

ইউনিয়ন পরিষদের মালিকানাধীন গাছ বিক্রির নীতিমালা থেকে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো গাছ বিক্রির উপযুক্ত হলে ইউনিয়ন পরিষদের সভায় সিদ্ধান্তগ্রহণপূর্বক কার্যবিবরণী সমূহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট প্রেরণ করতে হবে। প্রস্তাব সমূহ বিবেচনার জন্য ইউএনওকে আহ্বায়ক ও এসিল্যান্ডকে সদস্য সচিব করে ৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠণ করবে। যে কমিটিতে সদস্য হিসেবে উপজেলা প্রকৌশলী, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, বিভাগীয় বন কর্মকর্তার প্রতিনিধি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সদস্য হিসেবে থাকবে। এরপর এই কমিটি গাছ বিক্রয়ের যৌক্তিকতা, পরিবেশগত অবস্থা বিবেচনা এবং বিক্রয়যোগ্য গাছ মূল্য নির্ধারণ পূর্বক ৫ লক্ষ টাকা মূল্যমান গাছের ক্ষেত্রে উপযুক্ত বিবেচিত বলে নিলামে বিক্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এরপর জেলা প্রশাসকের কাছে অনুমতি নিয়ে দরপত্র প্রকাশ করবে।

কিন্তু এসব নীতি উপেক্ষা করেই নির্বাচনে স্বার্থ হাসিলের জন্য ইউপি মেম্বার হায়দার খানের নির্দেশে এসব গাছ কেটে নেয় তার সমর্থকেরা। এরমধ্যে বাবু নামের ঐ ব্যক্তি মুঠোফোনে এই প্রতিবেদকের কাছে দাবি করেন- রাস্তায় তার ব্যক্তিগত জায়গা রয়েছে। সেই জায়গা থেকেই আমি ১৬টি গাছ কেটে ঘরের কাজ করেছি। তবে, জামাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি হায়দার মেম্বারের নির্দেশে ৪টি গাছ কেটেছি। এই গাছ টেন্ডারের মাধ্যমেই কাটা হয়েছে।

এ বিষয়ে সাবেক ইউপি মেম্বার হায়দার খান দাবি করে বলেন, তিনি গাছ কাটার বিষয়ে কিছুই জানেন না। তবে এক পর্যায়ে বলেন- ওরা নিমকহারাম। ওদের সুবিধার জন্য বলেছিলাম।

এদিকে এই গাছ কাটার বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন ঢালীকে জানানো হয়নি তিনি জানিয়েছেন। তিনি বলেন- বিষয়টি আমাকে কেউ অবগত করেনি। যদি তারা নিয়ম বর্হি:ভূত গাছ বিক্রি করে থাকে তাহলে তদন্তপূর্বক বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

   


পাঠকের মন্তব্য