মেয়েদের মন খুবই বিচিত্র : জান্নাতুন নাঈম প্রীতি

লেখিকা- জান্নাতুন নাঈম প্রীতি

লেখিকা- জান্নাতুন নাঈম প্রীতি

মেয়েদের মন খুবই বিচিত্র। কেমন বলি- বাংলাদেশে থাকতে এক ফ্রেঞ্চ ছেলের সাথে প্রেম হয়েছিল আমার। 'ঘরে থাকেনা তো মন' টাইপের মধুর প্রেম। তখন তার ফ্রেঞ্চ জড়ানো ইংরেজি শুনতেও ভালো লাগে। সে বৃষ্টি ভালবাসে না আর আমি বাসি, এই সমস্ত রোমান্টিক আলাপ হয়। 

তো সেই প্রেম ছুটে যাওয়ার একটা কারণ ছিলো। খুবই তুচ্ছ কারণ।  ছেলে তখন তার কোম্পানির কাজে দুবাই থাকে। 

সে একদিন একটা চকচকে স্পোর্টস কার কিনলো, ঝাঁ চকচকে লাল রংয়ের স্পোর্টস কার। মানে তাকায় থাকলে সেই কারের দিকে আপনি তাকায়েই থাকবেন, এই টাইপের অবস্থা। ও তো আমাকে জিজ্ঞেস করছে- গাড়ি কেমন হইছে? 

আমি দুষ্টুমি করে বলেছিলাম- দেখে মনে হচ্ছে তুমি তোমার নতুন গার্লফ্রেন্ড পেয়ে গেছো ! এইটুকুই। 

এরপর যা হলো সেটা ভয়াবহ। সে আমাকে ক্ষেপে গিয়ে বলে বসলো তৃতীয় বিশ্বের মানুষজন এমনই, অনেক দামি কিছু দেখলে এমনই মন্তব্য করে! আমি এত পরিমান শকড হলাম যে কি বলবো ভুলে গেলাম। পরে সে দ্রুতই স্যরি ট্যরি চাইলো, আমি মাফও করে দিলাম। কিন্তু কি হলো বলেনতো?

-সে যখন বাংলাদেশে আসার জন্য সোনারগাঁও হোটেলে রুম বুক করল, সে জানাল- আমার জন্য গিফট কিনেছে, ডায়মন্ড রিং! আমি খুবই উচ্ছ্বসিত হওয়ার চেষ্টা করলাম, কিন্তু তার দুইদিন পরে আমি তাকে সাফ জানিয়ে দিলাম আমি আর কখনোই তার সাথে দেখা করব না! সে প্রায় আকাশ থেকে পড়ল- দেখা করবানা কেন? 

আমি তাকে বললাম- তোমার কি মনে আছে, তুমি বলেছিলে তৃতীয় বিশ্বের মানুষজন দামি কিছু দেখলে কেমন মন্তব্য করে? 
সে আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করলো- আমি তাকে গুডবাই জানিয়ে ফোন কেটে দিলাম। হোয়াটসঅ্যাপে ব্লক দিলাম, ফেসবুক থেকে বিদায় দিলাম। 

অনেকদিন পর এক আপু তার ডিভোর্সের কারণ বলেছিলেন- প্রায়ই ভাতের খোঁটা দিতো। ঝগড়া লাগলেই চুলের মুঠি ধরে বলতো- কার খাইস কার পরিস হিসাব আছে? অথচ সেই লোকের ফ্যামিলি তাকে চাকরিও করতে দিবেনা। তিনি নিজের চেষ্টায় গোপনে পরীক্ষা দিয়ে কিন্ডারগার্টেন স্কুলে চাকরি পেয়ে ছেড়ে দিয়েছিলেন সেই লোককে, তাও নিজের পরিবারের অমতে। 

তো যা বলছিলাম- মেয়েদের মন খুবই বিচিত্র। খুব সামান্যেই আমরা ক্ষেপে যাই, কারণ আত্মসম্মানবোধ আমাদের কাছে সামান্য না ভাই, অসামান্য ! যে তার সামান্য সম্মানটুকু পেলোনা, তার অসামান্য জিনিসপত্র নিয়ে ভাবার সময় কই?

   


পাঠকের মন্তব্য