জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের নতুন কমিটি গঠন

সভাপতি শরণ, সম্পাদক সুমাইয়া

সভাপতি শরণ, সম্পাদক সুমাইয়া

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২টি সাংস্কৃতিক সংগঠনের জোট জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের ২০২৩-২৪ সেশনের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী শরণ এহসান এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া জাহান। তারা উভয়ই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭ ব্যাচের (মাস্টার্স) শিক্ষার্থী।

গত শুক্রবার (১৪ জুলাই) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের কনফারেন্স রুমে ১১ টি সংগঠনের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে আয়োজিত কাউন্সিলে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ কমিটি গঠিত হয়।

কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন: ১নং সহ-সভাপতি সাদ্দাম হোসেন রোহান (জলসিঁড়ি), ২ নং সহ-সভাপতি আব্দুর রহমান নাহিদ (সুস্বর), যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক বান্না (জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার টিএসসি), অর্থ সম্পাদক- নওশিন উলফাত সুকন্যা (জাহাঙ্গীরনগর সিনে সোসাইটি), দপ্তর সম্পাদক- আহসান লাবিব (চিরকুট), প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক- সাদমান অলীভ (জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট অর্গানাইজেশন)। 

এছাড়া কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন বেদত্রয়ী গোস্বামী (জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট সোসাইটি), আ.র.ক রাসেল (চারণ), রিফাত হাসান (ধ্বনি)। 

সাংস্কৃতিক সংগঠন চারণ'র হয়ে কাজ করতে আপত্তি থাকায় গত রবিবার (১৬ জুলাই) জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন নবনির্বাচিত কমিটির কার্যকরী সদস্য আ র ক রাসেল। তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে চারণের পক্ষে সোহাগী সামিয়াকে নতুন কার্যকরী সদস্য করা হয়েছে।

এদিকে কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেট অর্গানাইজেশনের (জেইউডিও) সদস্য মোহাম্মদ রায়হানের বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হলে গতকাল সোমবার (১৮ জুলাই) ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে এর প্রতিবাদ করেন তিনি। পোস্টে তিনি বলেন,‘প্রথমত, এখানে উল্লেখিত বক্তব্যটিকে আমার ফেসবুক কমেন্ট থেকে আংশিক কেটে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। বক্তব্যের অর্ধেক প্রকাশ করা হয়েছে এবং বাকি অর্ধেক  প্রকাশ করা হয় নাই। আমি যেরকম বলছি বিষয়টাকে সেরকম না দেখিয়ে অন্যভাবে দেখানো হইছে। 

দ্বিতীয়ত, আমার এই কথার সাথে জেইউডিও কোনভাবেই সম্পৃক্ত নয়। এটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত অভিমত ছিল। আমি জেইউডিওর  কোন প্রতিনিধি  হিসেবে তার সাথে কথা বলি নাই । তাই আমার বক্তব্যের একটা ক্ষুদ্র অংশকে জেইউডিওর বক্তব্য হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার যে অপচেষ্টা করা হয়েছে সেটা একদমই অনুচিত।’

নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের ২০২২-২৩ সেশনের সহ সাধারণ সম্পাদক প্রাপ্তি তাপসী দে বলেন,“জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট ২০২৩-২৪ কার্যকরী পর্ষদের নির্বাচনে জোটভুক্ত সকল সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন এবং সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়াই নির্বাচনের নিয়মাবলী সুষ্ঠুভাবে মেনে করা হয়েছে। নির্বাচন শেষেও সংগঠনগুলোর মধ্যে 'নির্বাচনী প্রক্রিয়া' নিয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনো অসন্তোষ পরিলক্ষিত হয় নি। নির্বাচন শেষে সকলের উপস্থিতি এবং অংশগ্রহণেই বিগত কমিটি নতুন কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে।”

জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি শরণ এহসান বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর সম্মিলিত প্রয়াস জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট। জোটভুক্ত ১২টি সংগঠনের নিয়মিত কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়া ও তাদের মধ্যকার আন্তঃসম্পর্ক জোরদার করতে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট।”

তিনি আরও বলেন, “মানুষকে নিয়েই সংস্কৃতি, মানুষের জন্যই সংস্কৃতি। জনমানুষের সঙ্গে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের যে বিচ্ছিন্নতা ধরা পড়ে এখন, সেসকল সংকট নিরসন করে সংস্কৃতি চর্চাকে আরও বেশি জনমানুষের কাছাকাছি নিয়ে আসার প্রয়াসে আমরা সকলে বদ্ধপরিকর। আগামী দিনে শুধু জাহাঙ্গীরনগর নয়, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক মৃত্তিকায় সাবলীল পদক্ষেপ রাখতে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট সর্বাত্মক কাজ করে যাবে।”

সাধারণ সম্পাদক সুমাইয়া জাহান বলেন, “সাংস্কৃতিক জোটের দায়িত্ব একইসাথে জোট এবং সংগঠনের প্রতি দায়িত্ব বাড়িয়ে দেয়। জোট হচ্ছে কালচারাল সংগঠনগুলার একটা আশ্রয়স্থল। আমরা চেষ্টা করবো জোটের যে লেগ্যাসি সেটা বজায় রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ার।”

   


পাঠকের মন্তব্য