ফরিদপুর মেডিকেলের পর্দা কেলেঙ্কারির অভিযোগপত্র দাখিল

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (বর্তমান নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) বহুল আলোচিত পর্দা কেলেঙ্কারির ঘটনায় ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। যাদের মধ্যে পাঁচজনই চিকিৎসক। 

গত ৯ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশনে কমিশনার মো. জহুরুল হকের (তদন্ত) স্বাক্ষর করা এক চিঠিতে এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পরে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানান ফরিদপুর দুদকের সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. রেজাউল করিম। 

তিনি বলেন, “দুদকের প্রধান কার্যালয়ের আদেশ পাওয়ার পরেই আমরা ১৪ জন আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪০৯/৫১১/১০৯ তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুনীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় চার্জশিট নং-৩ বিচারার্থে বিজ্ঞ ফরিদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দাখিল করেছি।” 

তিনি আরও বলেন, আগামী ১১ সেপ্টেম্বর ওই মামলায় পরবর্তী তারিখ ধার্য করা আছে। 

২০১৯ সালের ২০ অগাস্ট ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) কেনাকাটায় অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা তদন্ত করতে দুদককে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। 

অভিযোগটির অনুসন্ধান শেষে ওই বছরের ২৭ নভেম্বর পর্দা ও সরঞ্জামাদি কেনাকাটায় ১০ কোটি টাকা দুর্নীতির ঘটনায় মামলা করে দুদক। সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী মামলাটি করেছিলেন। 

সেই মামলায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে চিকিৎসকরা হলেন- ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক (শিশু বিভাগ) বরুণ কান্তি বিশ্বাস, সাবেক সিনিয়র কনসালটেন্ট (চক্ষু বিভাগ) এনামুল হক, সাবেক অধ্যাপক (মেডিসিন) শেখ আবদুল ফাত্তাহ, সাবেক সহযোগী অধ্যাপক (সার্জারি) মো. মিজানুর রহমান, সাবেক আরএমও মো. শফিক উল্লাহ।    

একই হাসপাতালের সমাজসেবা অফিসার ওমর ফারুক, স্টোরকিপার আবদুর রাজ্জাক, ফরিদপুর সিভিল সার্জন অফিসের সাবেক সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার আলমগীর ফকির, ফরিদপুর গণপূর্ত উপবিভাগের সাবেক উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) আবদুস সাত্তার, জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুন্সি সাজ্জাদ হোসেন, রাজধানীর মহাখালীর নিমিউ অ্যান্ড টিসির সহকারী প্রকৌশলী (ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং) মিয়া মোর্তজা হোসাইনের বিরুদ্ধেও অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। 

এছাড়া সরবরাহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনিক ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আবদুল্লাহ আল মামুন, মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মুন্সি ফররুখ আহমেদ এবং মেসার্স আলী ট্রেডার্সের মালিক আলমগীর কবিরের নামও অভিযোগপত্রে আছে।   

অভিযোগপত্রে বলা হয়- তাদের বিরুদ্ধে অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে পরস্পর যোগসাজশে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের জন্য অপ্রয়োজনীয় এবং অবৈধভাবে প্রাক্কলন ব্যতীত উচ্চ মূল্যে হাসপাতালে যন্ত্রপাতি ক্রয়ের মাধ্যমে সরকারের ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করার অভিযোগ পাওয়া যায়। 

তবে এই মামলার অভিযোগপত্র থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক (দন্ত বিভাগ) গণপতি বিশ্বাস শুভ, সাবেক জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি) মীনাক্ষী চাকমা এবং সাবেক প্যাথলজিস্ট ডা. এ এইচ এম নুরুল ইসলামকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। 

তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের মামলার দায় হতে অব্যাহতি দানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে ওই পত্রে উল্লেখ করা হয়।

   


পাঠকের মন্তব্য