চিরনিদ্রায় শায়িত রাবিছাত্র ফুয়াদ; মৃত্যুর কারণ জানতে চান স্বজনরা

শিক্ষার্থী ফুয়াদ আল খতিবের দাফন সম্পন্ন

শিক্ষার্থী ফুয়াদ আল খতিবের দাফন সম্পন্ন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী ফুয়াদ আল খতিবের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের পশ্চিম রাজিবপুর পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তবে তার আকস্মিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না স্বজন ও এলাকাবাসী। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে চান তারা।

ফুয়াদ আল খতিব উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের পশ্চিম রাজিবপুর গ্রামের মাওলানা আমিনুল ইসলাম সাজুর ছেলে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন। শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ১৮৪ নম্বর সিঙ্গেল কক্ষে থাকতেন।

জানাজার আগে দেওয়া বক্তব্যে ফুয়াদের বাবা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ভবিষ্যৎ শেষ। পরিবারের তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সে ছিল অত্যন্ত বিনয়ী ও মেধাবী। পরিবারের সবার আশা ছিল সে ভালো কিছু করবে। তার আকস্মিক এ মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।’

ছেলের জান্নাত কামনা করে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেকে আমি আর ফিরে পাবো না জানি। তবে কী কারণে মারা গেলো আমরা সেটি জানতে চাই।’

হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে ফুয়াদের মা ফাতেমা বেগম বলেন, ‘ছেলে আমার পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বাড়ি এসেছিল। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে পরীক্ষা দিয়ে শনিবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে ফিরে যায়। হঠাৎ মৃত্যুর খবর শুনে আঁতকে উঠি। আমাদের সব শেষ হয়ে গেলো।’

নিহত ফুয়াদের চাচা রুহুল আমিন রাজু বলেন, ‘ভাতিজার আকস্মিক মৃত্যুতে আমরা অবাক ও শোকাহত। সম্পূর্ণ সুস্থ ছেলে শনিবার বাড়ি থেকে রাজশাহী গিয়েছে। পরের দিন তার মরদেহ। বিষয়টি রহস্যজনক মনে হচ্ছে।’

ফুয়াদের কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অত্যন্ত ভদ্র, নরম ও শান্ত স্বভাবের ছিলেন ফুয়াদ। তার মধ্যে কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি। তিনি আত্মহত্যা করার মতো ছেলে না।

শনিবার বাড়ি থেকে রাজশাহী যান ফুয়াদ আল খতিব। রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে তার সিঙ্গেল রুমে ঘুমিয়ে পড়েন। জার্নি করে ফেরায় রোববার সকালে তার রুমে তাকে কেউ ডাকতে যাননি। পরে দুপুর পর্যন্ত ঘুম থেকে না উঠলে পাশের কক্ষের এক বন্ধু ডাকাডাকি করেন। সাড়া না পেয়ে শরীর ধরে নাড়া দেন। তখন ফুয়াদের মুখ দিয়ে লালা পড়তে এবং পুরো শরীর কালো হয়ে গেছে দেখা যায়।

পরে কয়েকবন্ধু মিলে বিকেল ৩টার দিকে অচেতন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, কয়েক ঘণ্টা আগে মারা গেছেন ফুয়াদ।

   


পাঠকের মন্তব্য