পাহাড়ি অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া জঙ্গিদের বয়ান দিতেন মহিবুল্লাহ

সশস্ত্র জিহাদের ডাক দিতেন এই মুহিবুল্লাহ

সশস্ত্র জিহাদের ডাক দিতেন এই মুহিবুল্লাহ

নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকীয়ার নায়েবে আমির মহিবুল্লাহ ওরফে ভোলার শায়েখকে (৪৮) গ্রেফতারের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। মূলতঃ সারাদেশ থেকে পাহাড়ি অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া জঙ্গিদের বয়ান দিতেন মহিবুল্লাহ। তার উদ্দেশ্যই ছিল ধর্মীয় অপব্যাখ্যা দিয়ে কর্মীদের মানসিকভাবে জিহাদের জন্য প্রস্তুত করা। তাকে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পেয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ (সিটিটিসি)।

এর আগে মহিবুল্লাহকে রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়। এসময় ২টি মোবাইল এবং একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানানো হয়। এছাড়াও সিটিটিসির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এই মুহিবুল্লাহ জঙ্গি সংগঠনটির নায়েবে আমির।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান এসব দাবি করেন।

সিটিটিসি প্রধান জানান, মহিববুল্লাহ ওরফে ভোলার শায়েখকে সংগঠনটির নায়েবে আমির হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। তিনি ক্যাম্পে অবস্থানকালে সন্ধ্যার পর প্রশিক্ষণরত সদস্যদেরকে বয়ান দিতেন। তার বয়ানের মূল উদ্দেশ্য ছিল ধর্মীয় অপব্যাখ্যার মাধ্যমে জঙ্গি সদস্যদেরকে জিহাদের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করা।

এসময় তিনি দাবি করেন, এই মহিববুল্লাহ পাহাড়ে কিছুদিন অবস্থান করার পর ঢাকায় চলে আসেন এবং শুরা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে এনক্রিপ্টেড চ্যাট এর মাধ্যমে সমন্বয় করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দাওয়াতের মাধ্যমে সংগঠনের কার্যক্রম বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম চালাতে থাকেন। শুরা সদস্য চিকিৎসক শাকের ওরফে শিশিরকে দাওয়াতী কার্যক্রমের বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা করার জন্য মহিববুল্লাহকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সংগঠনের শুরা পর্যায়ের একাধিক সদস্যের সাথে ঢাকা সিলেট ও কিশোরগঞ্জে সংগঠনের কার্যক্রম জোরদার করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সেই একাধিক বৈঠকে অংশ নিয়েছে। এছাড়া তিনি হাটহাজারীসহ বিভিন্ন মাদরাসাতে বিভিন্ন সময়ে আসা-যাওয়া করতেন এবং সেখান থেকে পেইনড্রাইভ এর মাধ্যমে বিভিন্ন জিহাদী ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে তার ল্যাপটপে সংরক্ষণ করতেন।

তবে চিকিৎসক শাকির গ্রেফতারের পর মুহিবুল্লাহ তার ব্যবহৃত সিম ও মোবাইল করে ফেলেন। তবে তাকে প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরদারী করে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সিটিটিসি বলছে, মুহিববুল্লাহ চট্টগ্রামের হাটহাজারীর আল জামেয়াতুল আহেলিয়া দারুল উলুম মইনুল ইসলাম মাদরাসার ছাত্র থাকাকালে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি-বি) এর সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। সেই সময় হুজির অন্যান্য সদস্যদের সাথে তিনি বিভিন্ন মাদরাসায় কথিত জিহাদী ট্রেনিং গ্রহণ করেন। হুজির নেতা মুফতি আব্দুর রউফ আফগানিস্তানসহ অন্যান্য জায়গাতে জিহাদে যাওয়ার ব্যাপারে হাটহাজারি মাদরাসা ও আশে-পাশের এলাকায় নিয়মিত বক্তব্য দিতেন এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতিত মুসলিমদের সাহায্য করার জন্য সশস্ত্র জিহাদের ডাক দিতেন এই মুহিবুল্লাহ।

   


পাঠকের মন্তব্য