সিরিজ জয়ে প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন

'ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়' 

সিরিজ জয়ে প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন

সিরিজ জয়ে প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন

একদিনের ক্রিকেটে বিশ্ব মানচিত্রে ভালোভাবেই নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে বাংলাদেশ। এই সংস্করণে যেকোনো দলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে সক্ষম টাইগাররা। খুব স্বাভাবিকভাবেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের আশা ছিল। আশাভঙ্গ হয়েছে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ যেটা করল, সেটা ছিল ভাবনারও বাইরে। দর্শকে ঠাসা গ্যালারি তখন যেন প্রায় ঘুমিয়ে। শ্মশানের নীরবতা হয়তো নয়, তবে পরিবেশ থমথমে। সাকিব আল হাসান ও আফিফ হোসেনের দ্রুত বিদায়ে হঠাৎ জাপ্টে ধরে হারের শঙ্কা। কিন্তু ক্রিস জর্ডানের বলে নাজমুল হোসেন শান্তর বাউন্ডারিতে ওই গ্যালারিই জেগে উঠল গর্জনে। সেই উত্তাল জোয়ারেই ভেসে গেল সব শঙ্কা। 

মেহেদী হাসান মিরাজের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স আর শান্তর দায়িত্বশীল ইনিংস বাংলাদেশকে পৌঁছে দিল জয়ের ঠিকানায়। আপাতত সহজ ম্যাচ হুট করে কঠিন করে ফেললেও শেষ পর্যন্ত হতাশায় পুড়তে হয়নি বাংলাদেশকে। ৪ উইকেটের জয়ে নিশ্চিত হয়ে গেল সিরিজ জয়। এই সিরিজ জয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিনন্দন জানান বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে।

চট্টগ্রামে শেষ ওয়ানডে জয়ের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর ম্যাচেও ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। সেই ফর্মটা ঢাকাতেও টেনে এনেছে টাইগাররা। গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারিয়েছে টাইগাররা। ইংলিশদের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতেছে চার উইকেটে। ক্রিকেটে তিন সংস্করণ মিলিয়ে এই প্রথম ইংলিশদের সিরিজ হারাল বাংলাদেশ।

রবিবার (১২ মার্চ) টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা ইংল্যান্ডকে ১১৭ রানে গুঁড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। এই রান তাড়া করতে গিয়ে সহজ জয়ের পথেই ছিল টাইগাররা। শেষ দিকে কিছুটা ছন্দপতন হলেও তাতে জয়ের পথ আটকায়নি। মামুলি লক্ষ্য সাকিব অ্যান্ড কোং (১২০/৬) পেরিয়ে যায় সাত বল হাতে রেখেই। এই হারে বাংলাওয়াশের মুখে পড়ল ইংল্যান্ড। আগামীকাল একই ভেন্যুতে মান বাঁচানোর লড়াইয়ে নামবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

রান তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হয়নি। ২৭ রানের মধ্যে সাজঘরে ফিরে যান দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদার। দুজনই ফেরেন সমান ৯ রানে। পরে দলের হাল ধরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। মনোযোগ দেন ইনিংস মেরামতে। তৌহিদ হৃদয় ও মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে এগোতে থাকেন তিনি। মসৃণ হয়ে যায় জয়ের পথ। শেষদিকে গিয়ে অবশ্য হোঁচট খেতে হয় দলকে।

৯৭ রান থেকে ১০৫ রানে পৌঁছাতে বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলে তিন উইকেট। পরে শান্তর ব্যাটে ভয়টা কেটে যায়। ৪৭ বলে ৪৬ রানে অপরাজিত থাকেন ফর্মে থাকা বাঁহাতি ব্যাটার। এ ছাড়া হৃদয় ১৮ বলে ১৭ ও মিরাজ ১৬ বলে ২০ রান করেন। দ্বিতীয়জন বল হাতেও আলো ছড়িয়েছেন। চার ওভারে ১২ রানে চার উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডার ধসিয়ে দিয়েছেন মিরাজ।

অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে প্রত্যাশিতভাবেই ম্যাচসেরা হয়েছেন তিনি। চার ওভারে ১৩ রানে তিন উইকেট নিয়েছেন জফরা আর্চার। কিন্তু বিফলেই গেল তার বোলিং দ্যুতি। ইংলিশদের হারের আয়োজনটা অবশ্য করে দিয়েছেন টাইগার বোলাররাই। মন্থর উইকেটে অতিথিদের ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান সাকিব। ব্যাট হাতে ইংলিশদের শুরুটা একেবারে মন্দ ছিল না। এক উইকেটে দলীয় ফিফটি ছুঁয়েছিল তারা। এরপরই সফরকারীদের চেপে ধরেন বাংলাদেশের বোলাররা।

বোলিংয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন মিরাজ। ধস নামান ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনে। একদিকে উইকেটের রাশ টেনে ধরার চ্যালেঞ্জ অন্যদিকে দ্রুতগতিতে রান তোলার তাড়না। এই দুই চাপেই শেষ হয়ে গেছে তারা। শেষ ওভারেই তাদের পতন হয়েছে তিন উইকেটের। এর কেবল একটি নিয়েছেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। বাকি দুটি হয়েছে রান আউট।

‘কাটার মাস্টারে’র মতো একটি করে উইকেট নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ, সাকিব ও হাসান মাহমুদ। তবে ইংলিশদের অলআউট করতে আসল ভূমিকাটা রেখেছেন মিরাজই। বল হাতে মিতব্যয়ী ছিলেন মুস্তাফিজও। ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৮ বলে ২৮ রান করেছেন বেন ডাকেট। ১৯ বলে ২৫ রান এসেছে ওপেনার ফিলিপ সল্টের ব্যাট থেকে। এ ছাড়া মইন আলি ১৭ বলে ১৫, স্যাম কারান ১৬ বলে ১২ এবং রেহান আহমেদ ১১ বলে ১১ রানে আউট হয়েছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ইংল্যান্ড : ২০ ওভারে ১১৭
বাংলাদেশ : ১৮.৫ ওভারে ১২০/৬
ফল : বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী।

এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ বাংলাদেশের
ম্যাচসেরা : মেহেদী

   


পাঠকের মন্তব্য