জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন রফিক হাছনাইন

খন্দকার মোঃ রফিক হাছনাইন

খন্দকার মোঃ রফিক হাছনাইন

রংপুরের কাউনিয়া ও পীরগাছা নিয়ে গঠিত রংপুর-৪ সংসদীয় আসন। এবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন আওয়ামীলীগ নেতা এবং রংপুর জজকোর্টের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খন্দকার মোঃ রফিক হাছনাইন। ২০১৮ সালে এমপি মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। 

এবার ও দলীয় টিকেট চাইবেন তিনি। দলের প্রতি অনুগত, ত্যাগী ও মেধাবী রফিক হাছনাইন ১৯৬৯ সালে পীরগাছার অন্তরাম গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিকভাবে আওয়ামী ঐতিহ্যের সাথে বেড়ে উঠেছে তাঁর জীবন। 

খন্দকার মোঃ রফিক হাছনাইনের ভাই শিল্পি জামিল আজাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মুক্তি আন্দোলন এবং ফ্রান্সে মূর্তি পাচার বিরোধী আন্দোলনের পুরোধা হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। মেধাবী জামিল আজাদ বর্তমানে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে রবীন্দ্র ভারতি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আছেন। তাঁর বোন নাসরিন সুলতানা পীরগাছা কলেজ ছাত্রলীগের ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। 

তাঁর স্ত্রী তাহিয়া কবীর মহিলা আওয়ামীলীগ পীরগাছা থানা শাখার সভাপতি ছিলেন এবং খন্দকার মোঃ রফিক হাছনাইনের শশুর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ সরকার। দুই কন্যা সন্তানের গর্বিত জনক খন্দকার মোঃ রফিক হাছনাইন। তাঁর ছোট কন্যা অহর্নিশ হাছনাইন রংপুর জেলার সেরা শিক্ষার্থী এবং সেরা অভিনেত্রী, লেখক ও মার্শাল আর্টএ ব্লাকবেল্ড ধারী। সে জাতীয় পর্যায়ে অভিনয়ে সোনা বিজয়ী। বড় কন্যা আইনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর অধ্যয়নরত। বিভিন্ন ইংরেজি জার্নালে তার লেখা প্রকাশিত হয়ে আসছে।   

রংপুর জজকোর্ট চত্ত¡রের পরিচিত প্রিয়মুখ রফিক হাছনাইন ১৯৯১ সালে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে এলএল.বি. অনার্স ও  ১৯৯২ সালে এলএলএম পাশ করেন। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে পিএইচডি ফেলো করেছেন এবং মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনায় এমবিএ করেছেন। তিনি ১৯৯৪ সাল থেকে আইনজীবী কর্মজীবন শুরু করেন রফিক হাছনাইন। তাঁর বর্ণাঢ্য রাজনীতিক জীবনে ১৯৮৪-৮৬ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ পীরগাছা উচ্চ বিদ্যালয় শাখার সভাপতি, ১৯৮৬-৮৭ সালে পীরগাছা কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক, ১৯৮৭-৮৯ সালে রংপুর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ কালিন সময়ে ১৯৯০-৯৪ সালে সোরওয়ার্দী হল শাখার সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯৪-৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের পীরগাছা উপজেলা শাখার সভাপতি, ১৯৯৬-২০০০ পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ পীরগাছা উপজেলা শাখার যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক, ২০০৪-২০০৯ পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবি পরিষদ রংপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক, ২০১৪ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবি পরিষদ রংপুর জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং ২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু পরিষদ রংপুর জেলা আহবায়ক, এছাড়া বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী আইন সম্পাদক ও সভাপতি বঙ্গবন্ধু পরিষদ, রংপুর জেলা হিসেবে হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। 

বর্তমানে তিনি রংপুর মহানগর আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। রফিক হাছনাইন কর্মময় জীবনে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অ্যাডভোকেট, অ্যাডভোকেট, জজ কোর্ট রংপুর, পাবলিক প্রসিকিউটর (মহিলা ও শিশু), রংপুর এবং অধ্যাপক, আইন কলেজ রংপুর হিসেবে ছুটে বেড়ান সেবা নিয়ে। রফিক হাছনাইন রোভার স্কাউট করেছেন, আবৃত্তি, গান সামাজিক কর্মকান্ড, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড, লেখালেখি ও ভ্রমণ তার প্রিয় সময় কাটানোর মাধ্যম। 

২০১১ সালে বন্যার্তদের জন্য একলাখ খাওয়ার সেলাইন তৈরী করে বিতরণ করায় রংপুর জেলা স্কাউট কমিশনার হিসেবে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের হাত থেকে সিলভার ইলিশ পদক গ্রহণ ছিল তাঁর জীবনের অবিস্মরনীয় ঘটনা। ২০০৬ সালে বাংলাদেশ স্কাউটস থেকে চিফ ন্যাশনাল কমিশনারস অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছিলেন তিনি।

কাউনিয়া ও পীরগাছা নিয়ে গঠিত রংপুর-৪ সংসদীয় আসনটি স্বাধীনতার পর হাতছাড়া ছিল আওয়ামীলীগের। 

২০০৮ সালের নির্বাচনে সেই বৃত্ত ভেঁঙ্গে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে পরাজিত করে বিশিষ্ট শিল্পপতি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক, বর্তমান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাধেশ সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি বিজয় অর্জন করেন। পরে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে হেট্রিক করে এমপি রয়েছেন তিনি। 

এবারও তিনি মনোনয়ন চাইবেন। টিপু মুন্সির সঙ্গে আওয়ামীলীগের দলীয় টিকেট চাইবেন খন্দকার মোঃ রফিক হাছনাইন।  এছাড়া রংপুর ৪ আসনের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু পীরগাছা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবু নাসের শাহ মো. মাহবুবার রহমান, বিএনপির প্রার্থী এমদাদুল হক ভরসা এবং বিএনপির সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আফসার আলী এমনটি স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। 

এ ব্যাপারে খন্দকার মোঃ রফিক হাছনাইন জানান, আমি ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম। এবারও চাইব। দল বিবেচনা করে আমাকে দলীয় টিকেট দিলে আমি পীরগাছার নাভিপোতা সন্তান হিসেবে জনগণের বিপুল ভোটে বিজয় নিশ্চিত করব।

   


পাঠকের মন্তব্য