পুলিশের বিশেষ অভিযানে ইজিবাইক চোর চক্রের ৭ সদস্য গ্রেফতার

ফরিদপুর জেলা বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান

ফরিদপুর জেলা বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান

ফরিদপুর জেলা বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা ইজিবাইক ও মোটর সাইকেল চোর চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। এ সময় নয়টি চোরাই মোটরসাইকেল, ছয়টি ইজিবাইক ও চুরির কাজে ব্যবহৃত মালামাল উদ্ধার করা হয়।

২৬ আগষ্ট শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শাহজাহান। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান জানান, সম্প্রতি শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে একাধিক মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক চুরির ঘটনা ঘটে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) রাতে শহরের প্রবেশদ্বার রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে অভিযান চালিয়ে চোর চক্রের সদস্য রাসেল মাতুব্বরকে (৩৫) একটি পালসার মোটরসাইকেলসহ গ্রেপ্তার করা হয়।

রাসেলকে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক চুরি করেন। তার সহযোগী বাদশা, সিদ্দিক ও সাদ্দাম। সিদ্দিক ও বাদশা চুরি করার জন্য মাস্টার চাবি তৈরি করে দেয়। তাদের কাছে চুরি করা মালামাল রয়েছে।

রাসেলের দেওয়া তথ্যমতে, শুক্রবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে ফরিদপুর সদর উপজেলার চর মাধবদিয়া ছনেরটেক গ্রামে বাদশার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বাদশা ফকিরকে (৪০) গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার বাড়ি থেকে তিনটি ডিসকভার ও একটি রোড মাস্টার মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। বিকেলে সিদ্দিকের বাড়ি রঘুনন্দনপুরে অভিযান চালিয়ে একটি পালসার, দুইটি ডিসকভার ও একটি রেঞ্জার মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয় এবং সিদ্দিক সরদারকে (৩৯) গ্রেপ্তার করা হয়।  

সিদ্দিকের দেওয়া তথ্যমতে, রাতে রাজবাড়ী জেলার জবানীপাড়া গ্রামের বাড়ি থেকে আল আমীনকে (২৯) গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার হেফাজতে থাকা তিনটি চোরাই ইজিবাইক উদ্ধার করা হয়।

পরে সিদ্দিকের দেওয়া তথ্যানুসারে, শুক্রবার রাতে সদরপুর উপজেলার হাটকৃষ্ণপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে আয়নাল হোসেনকে (৩২) গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার বাড়িতে থাকা তিনটি ইজিবাইক উদ্ধার করা হয়।  

পরবর্তীতে আটকদের দেওয়া তথ্যমতে, শনিবার ভোররাতে ফরিদপুর শহরের আলীপুর বাদামতলী সড়ক থেকে সহযোগী ইয়াছিন খাঁ (৩০) ও নর্থ চ্যানেল থেকে সাদ্দাম মোল্যাকে (৩৬) গ্রেপ্তার করা হয়।  

পুলিশ সুপার জানান, গ্রেফতারকৃতরা পরস্পর যোগসাজশে সংঘবদ্ধ হয়ে দীর্ঘদিন ধরে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক চুরি করে বিক্রি করে আসছিলেন। এরা আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য।  

তিনি আরও জানান, দেশের বিভিন্ন থানায় রাসেলের নামে ১১টি, বাদশার নয়টি, সিদ্দিকের আটটি, সাদ্দামের চারটি, ইয়াছিনের চারটি ও আল-আমিনের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বাড়ি ফরিদপুর ও রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন উপজেলায়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার ছাড়াও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) শৈলেন চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাউদ্দিন, কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল, জেলা পুলিশের পরিদর্শক (ক্রাইম) হাবিল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

   


পাঠকের মন্তব্য