বামনডাঙ্গা স্টেশন ট্রেনের টিকিট কাটতে হয় শুয়ে-বসে 

বামনডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের চিত্র

বামনডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের চিত্র

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন। বামন শব্দটির সঙ্গে মিল রয়েছে এ স্টেশনের। এই স্টেশনে ইচ্ছে করলেই দাঁড়িয়ে টিকিট ক্রয় করতে পারবেন না কেউই। হয় বসে, না হয় শুয়ে থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। স্টেশনের উচ্চতা বৃদ্ধি করায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই স্টেশনে কোমর বাঁকা করে হেলে অথবা মেঝেতে বসে সাধারণ যাত্রীরা টিকিট কাটছেন। প্ল্যাটফর্ম থেকে বগির উচ্চতা অনেক বেশি হওয়ায় স্বাচ্ছন্দ্যে ট্রেনে ওঠা-নামা করতে প্লাটফর্মের উচ্চতা বৃদ্ধি করা হয়। এতে ট্রেনে উঠতে বয়স্ক ব্যক্তি, নারী, অসুস্থ ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের সুবিধা হলেও টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক বছর আগে আগে বামনডাঙ্গা স্টেশনের প্লাটফর্ম ও ওয়েটিং রুমের উচ্চতা বৃদ্ধির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। অন্যদিকে, স্টেশন মাস্টারের কক্ষ-কাম টিকিট কাউন্টারটি আগের উচ্চতায় থাকায় টিকিট কাউন্টারটি নিচে পড়ে যায়। এতে কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহে এমন সমস্যায় পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।

বামডাঙ্গা স্টেশনে টিকিট ক্রয় করতে আসা মিলন মিয়া বলেন, ঢাকা যাব, এজন্য বামনডাঙ্গা স্টেশনে টিকিট ক্রয় করতে এসেছি। ভাই কি আর বলব জীবনে বহু জায়গায় ঘুরেছি ট্রেনে করে বহু স্টেশন দেখেছি, কিন্তু এরকম অদ্ভূত স্টেশন দেখিনি। এখানে দাঁড়িয়ে টিকিট কেনা যায় না।

আকাশ মিয়া নামে এক দিনাজপুরগামী যাত্রীর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, এখানে টিকিট কাটার পরিবেশটা অন্যরকম। বয়স্ক লোক কিংবা মহিলাদের জন্য এখানে টিকিট সংগ্রহ করা কষ্টের। অনেক ক্ষেত্রে বসে থেকে টিকিট কাটা লজ্জা কিংবা খারাপ লাগে। তিনি রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে এই সমস্যা দূর করার অনুরোধ করেন।

স্থানীয় রাশেদুল ইসলাম রাশেদ নামে এক যুবক বলেন, কোটি টাকা ব্যয়ে স্টেশনটি আধুনিকায়ন করা হলেও টিকিট কাউন্টারটির এমন চিত্র ব্যতিক্রম। এভাবে বসে, হেলে, শুয়ে টিকিট কাটতে গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ায় ঘটেছে আহতের ঘটনাও। বারবার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও সমাধান মেলেনি। 

এ ব্যাপারে বামনডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের দায়িত্বরত পোর্টার স্টাফ মিলন চন্দ্র বর্মন জানান, এই স্টেশনটি উঁচু হওয়ার কারণে যাত্রীরা দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে পারে না। যাত্রীরা বসে টিকিট সংগ্রহ করছে। এতে করে সাধারণ যাত্রীরা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা আছে। নতুন ভবনের কাজ শুরু হলে এই প্রতিবন্ধকতা দূর হবে।

আয়ের দিক থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাট ডিভিশনের মধ্যে বামনডাঙ্গা রেল স্টেশনটি তৃতীয়স্থানে রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী রেল স্টেশনটির এমন অবস্থার দ্রুতই সমাধান চান এলাকাবাসী।

   


পাঠকের মন্তব্য